শব্দার্থবিদ্যা যতটা ‘humanities’, ততটাই ‘natural science’-এর বিষয়।
এই প্রকৃতিবিজ্ঞানের সর্বজনগ্রাহ্য রূপটি হল অঙ্কশাস্ত্র (গণিত নয়)। এবার
উদাহরণ হিসেবে ১+২+৩...∞ -এই অসীম শ্রেণীটিকে নেওয়া যাক। শ্রেণীটির যোগফল
যা হতে পারে বলে সাধারণ ভাবে মনে হয়, তা হল একটি সুবিশাল ধনাত্মক সংখ্যা
(আদতে তাই-ই)। কিন্তু, শ্রীনিবাস রামানুজম দেখিয়েছেন এহেন শ্রেণীটি
(-১/১২)-এ ‘অভিসৃত হতে’ (converge করতে) সক্ষম। এই আঙ্কিক বিষয়টি থেকে
উপলব্ধ দর্শন হল, যে কোনও তরঙ্গ বা গতিশীল, সতত সঞ্চারণশীল স্বত্ত্বা
(entity) কোনও না কোনও ভাবে ক্ষণিকের জন্য হলেও স্থিরতা বা স্থিথিশীলতা
প্রাপ্ত হয়। -যা কিনা এই ধরণের শ্রেণীর চেনাশোনা (প্রতীয়মান) চরিত্রকেও
(ধনাত্মক) পুরোপুরি উল্টে দিতে পারে। কোয়ান্টাম বিজ্ঞানে একেই ‘জটিল
সংগঠনে’র (complex system) সহজাত ‘বিভাজন বিন্দু’ (bifurcation point) বলে।
শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ভাষায়, ‘লোকটি কবি, ছবি আঁকে ছিঁড়ে ফেলে দেয়।’... ধ্বনি, যা কিনা একটি তরঙ্গ, (যা আবার গতিশীল ও সতত সঞ্চারণশীল স্বত্ত্বা) আদতে একটি ‘জটিল সংগঠন’। আর তাই সহজাত গুণেই ভিন্ন ভিন্ন ‘বিভাজন বিন্দু’তে তা ভিন্ন ভিন্ন অর্থযুক্ত ক্রিয়া (শব্দ বা ‘word’) হিসেবে প্রকাশিত হয়। ঠিক যেমন পর্যায়ক্রমে তরঙ্গ (wave) থেকে কণার (particle), কণা থেকে ভরের (mass), ও ভর থেকে বস্তুর (matter) উদ্ভব হয়। -যা কিনা ক্রিয়ার, ক্রিয়াশীলতার ধর্মগুলিকেই সতত বয়ে চলে। সুতরাং, কোনও শব্দের অর্থ field বা ক্ষেত্রসাপেক্ষে (স্থান কাল পাত্রের ভিন্নতায়) পরিবর্তন তো বটেই, পুরোপুরি উল্টেও যেতে পারে। যেমন হিন্দির ‘আগে দেখিয়ে’ আর বাংলার ‘আগে দেখুন’ –এর অর্থ পুরোপুরি উল্টো। মাত্রা (dimension)-ভেদে ধ্বনির ব্যবহারিক অর্থ বদলে যায়। এই অর্থযুক্ত ধ্বনি বা শব্দগুলি মৌহূর্তিক অভিসরণ (momentary convergence) ছাড়া আর কী হতে পারে?
একবার ‘ফাজিল’ শব্দটিকেই ভেবে দেখা যাক, - আরবি আর উর্দুতে তার অর্থ ‘জ্ঞানী’, এদিকে বাংলায় তার অর্থ বাচাল, ফক্কড়। অনুমান করা যায় একটি স্থানে বা পাত্রের কাছে যা ছিল জ্ঞান, অপর স্থানে বা পাত্রের কাছে (যে কোনও কারণেই হো’ক) তা হল বাচলতা। আবার, যেমন বলা হয়েছে, কালের পরিবর্তনেও অর্থ যায় বদলে। ইংরেজির ‘nice’ ও ‘silly’ –শব্দদুটির অর্থ যেমন সময়ের সাথে একেবারেই উল্টে গিয়েছে। প্রাচীন ইংরেজিতে ‘nice’ শব্দটির অর্থ ছিল ‘foolish, stupid, senseless’ আর ‘silly’ শব্দটির অর্থ ছিল ‘happy, fortuitous, prosperous’! এই ক্ষেত্রে যা কিনা সময়ের সাথে দৃষ্টিভঙ্গী বদলের ইঙ্গিত। তবে মাথায় রাখতে হবে, এই বিভাজন বিন্দু বা bifurcation point-গুলির অস্তিত্বকে আপাতভাবে বিশৃঙ্খলা (chaos) মনে হলেও তারও কিন্তু নিয়মনিষ্ঠতা (স্ব-সংগঠন) আছে।...
যে কোনও ধরণের অভিসরণ (convergence) ছাড়া অসীমতাকে জানার বা বোঝার (to access) অন্য কোনও উপায় মানুষের হাতে নেই। সংগঠনের (stucture) ভিতরে ও বাইরে যেখানে সময়ও (time) অন্যতম চলক (variable) হলে তখন অভিসরণকেই আপাত-সত্য হিসাবে (অন্তত প্রাথমিক ধাপ হিসেবে) মেনে নিতেই হয়। বাকিটা সংগঠনের (system) আন্তরিক প্রবণতার ওপরে নির্ভর। সুতরাং ধ্বনির সঙ্গে অর্থের যুক্তি বা বিযুক্তি প্রকৃতপ্রস্তাবে প্রবহমান তরঙ্গশ্রেণীর এক-একটি ‘অভিসরণ বিন্দু’ (converging point)।...
শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ভাষায়, ‘লোকটি কবি, ছবি আঁকে ছিঁড়ে ফেলে দেয়।’... ধ্বনি, যা কিনা একটি তরঙ্গ, (যা আবার গতিশীল ও সতত সঞ্চারণশীল স্বত্ত্বা) আদতে একটি ‘জটিল সংগঠন’। আর তাই সহজাত গুণেই ভিন্ন ভিন্ন ‘বিভাজন বিন্দু’তে তা ভিন্ন ভিন্ন অর্থযুক্ত ক্রিয়া (শব্দ বা ‘word’) হিসেবে প্রকাশিত হয়। ঠিক যেমন পর্যায়ক্রমে তরঙ্গ (wave) থেকে কণার (particle), কণা থেকে ভরের (mass), ও ভর থেকে বস্তুর (matter) উদ্ভব হয়। -যা কিনা ক্রিয়ার, ক্রিয়াশীলতার ধর্মগুলিকেই সতত বয়ে চলে। সুতরাং, কোনও শব্দের অর্থ field বা ক্ষেত্রসাপেক্ষে (স্থান কাল পাত্রের ভিন্নতায়) পরিবর্তন তো বটেই, পুরোপুরি উল্টেও যেতে পারে। যেমন হিন্দির ‘আগে দেখিয়ে’ আর বাংলার ‘আগে দেখুন’ –এর অর্থ পুরোপুরি উল্টো। মাত্রা (dimension)-ভেদে ধ্বনির ব্যবহারিক অর্থ বদলে যায়। এই অর্থযুক্ত ধ্বনি বা শব্দগুলি মৌহূর্তিক অভিসরণ (momentary convergence) ছাড়া আর কী হতে পারে?
একবার ‘ফাজিল’ শব্দটিকেই ভেবে দেখা যাক, - আরবি আর উর্দুতে তার অর্থ ‘জ্ঞানী’, এদিকে বাংলায় তার অর্থ বাচাল, ফক্কড়। অনুমান করা যায় একটি স্থানে বা পাত্রের কাছে যা ছিল জ্ঞান, অপর স্থানে বা পাত্রের কাছে (যে কোনও কারণেই হো’ক) তা হল বাচলতা। আবার, যেমন বলা হয়েছে, কালের পরিবর্তনেও অর্থ যায় বদলে। ইংরেজির ‘nice’ ও ‘silly’ –শব্দদুটির অর্থ যেমন সময়ের সাথে একেবারেই উল্টে গিয়েছে। প্রাচীন ইংরেজিতে ‘nice’ শব্দটির অর্থ ছিল ‘foolish, stupid, senseless’ আর ‘silly’ শব্দটির অর্থ ছিল ‘happy, fortuitous, prosperous’! এই ক্ষেত্রে যা কিনা সময়ের সাথে দৃষ্টিভঙ্গী বদলের ইঙ্গিত। তবে মাথায় রাখতে হবে, এই বিভাজন বিন্দু বা bifurcation point-গুলির অস্তিত্বকে আপাতভাবে বিশৃঙ্খলা (chaos) মনে হলেও তারও কিন্তু নিয়মনিষ্ঠতা (স্ব-সংগঠন) আছে।...
যে কোনও ধরণের অভিসরণ (convergence) ছাড়া অসীমতাকে জানার বা বোঝার (to access) অন্য কোনও উপায় মানুষের হাতে নেই। সংগঠনের (stucture) ভিতরে ও বাইরে যেখানে সময়ও (time) অন্যতম চলক (variable) হলে তখন অভিসরণকেই আপাত-সত্য হিসাবে (অন্তত প্রাথমিক ধাপ হিসেবে) মেনে নিতেই হয়। বাকিটা সংগঠনের (system) আন্তরিক প্রবণতার ওপরে নির্ভর। সুতরাং ধ্বনির সঙ্গে অর্থের যুক্তি বা বিযুক্তি প্রকৃতপ্রস্তাবে প্রবহমান তরঙ্গশ্রেণীর এক-একটি ‘অভিসরণ বিন্দু’ (converging point)।...