বিদেশী
পণ্ডিত ও (বিদেশী শিক্ষায় শিক্ষিত) কিছু ভারতীয় পণ্ডিতের সৌজন্যে প্রাচীন
ভারতবর্ষের ইতিহাস আজও এক গোলকধাঁধা। সিন্ধু সভ্যতা আর বৈদিক বা আর্য্য
(‘আর্য’ নয়) সভ্যতার ইতিহাসকেই দেখা যাক। বলা হল, সিন্ধু সভ্যতা অনেক উন্নত
ছিল, সেই তুলনায় ‘বহিরাগত’ আর্য্যরা নাকি ছিল অনুন্নত। প্রথমটি
নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা, আর আর্য্যরা নগর বিরোধী। বলা হল, আর্য্যদের ঝটিকা
আক্রমণে সিন্ধু সভ্যতা ধ্বংস হয়। আর এই সম্পূর্ণ বিভাজনের অন্যতম প্রধান
যুক্তি হিসেবে ইতিহাসবিদদের মনে রইল -ঘোড়ার ব্যাবহার জানা আর না জানা।
দুঃখজনক ভাবে গোটা বিশ্লেষণটিই পরস্পর বিরোধিতায় পূর্ণ। ভেবে দেখুন না,
দারুণ উন্নত সিন্ধুসভ্যতার নিদর্শন হিসেবে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, হাসপাতাল,
স্নানাগার, ইত্যাদি পাওয়া গেল অথচ কিছু দুর্বোধ্য লিপি ছাড়া একটিও
সাহিত্যকীর্তি পাওয়া গেল না! আর বেদ, পুরাণ, উপনিষদ, রামায়ণ, মহাভারত যাদের
রচনা, -সেই আর্য্যরা নাকি ‘অনুন্নত’! তারা নাকি নগর বিরোধী ছিল, অথচ তাদের
রচনায় অযোধ্যা, হস্তিনাপুর, ইন্দ্রপ্রস্থ, মথুরা, দ্বারকা, ইত্যাদি নগরের
(কাল্পনিক ধরলেও) বর্ণনা বেশ স্বতঃস্ফূর্ত। এমনকি বেদেও নগর-মহত্বের উদাহরণ
নেহাৎ কম নয়।....
এরপরেও আর্য্যদের তথাকথিত নগর-বিরোধীতার প্রসঙ্গ উঠলে মোল্লা নাসিরুদ্দিনের ঢঙে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে, -এটা যদি বেড়াল হয়, তাহলে মাংস কোথায়? আর এটা যদি মাংস হয়, তাহলে বেড়াল কোথায়!? আসলে সিন্ধু সভ্যতা আর বৈদিক সভ্যতাকে গোড়াতেই আলাদা ধরে নেওয়ার পর যখন বৈদিক সভ্যতার কোনও পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেল না, তখন জবরদস্তি তাকে গ্রামীণ বলে দাগিয়ে দেওয়া হল। নইলে একদিকে যে জাতিকে পৃথিবীর প্রায় সবকটি উন্নত সভ্যতার জনক বলা হয়, তারা কখনও নগর বিরোধী হতে পারে?
ভৃত্যের জ্ঞান, ইতিহাস বা ঐতিহ্য প্রভুর থেকে মহানতর হলে প্রভু তা কোনওদিনই মেনে নেয় না। এদেশের একদা প্রভুরা এদেশের ইতিহাস লেখার সময় তার যথেষ্টই পরিচয় রেখেছেন। বস্তুতঃ, আর্য্য আগমন তত্ত্বের বিপক্ষে সহস্রাধিক প্রমাণ ও শতাধিক গ্রন্থ আছে। পারস্যের সম্রাট দারায়ুসের সমাধি আবিষ্কার হলে দেখা যায় সেখানে তার পরিচয় হিসেবে লেখা আছে ‘একজন পারসীক, একজন পারসীকের পুত্র, একজন আর্য্য, আর্য্যবংশোদ্ভূত’। -আর্য্য আগমন তত্ত্বে এ ছিল একটি বড়ো ধাক্কা। হাল আমলের গবেষকরাও এই তত্ত্বকে নাকচ করেছেন। যদিও মেক্ল সাহেবের প্রবর্তিত শিক্ষাব্যবস্থার গুণে বহু ভারতীয় আজও সত্যটি মানতে চান না।
‘আর্য্য’ শব্দটি জাতিবাচক নয়, গুণবাচক। ঋগ্বেদ (১.৫১.৮) অনুসারে এর অর্থ ‘বিদ্বান্, অনুষ্ঠাতা’। অমরকোষ টিকা অনুসারে এর অর্থ ‘উপজীব্যতা হেতু উপগম্য’। সহজ করে বললে, জীবিকার জোরে সমাজের উপরিভাগে উঠে আসা মানুষজন। (আজকের সমাজের সাপেক্ষে অফিসের মেজবাবু ছোটবাবুর থেকে বেশি আর্য্য, আবার বড়বাবু মেজবাবুর থেকে বেশি আর্য্য।) এই ‘আর্য্য’ থেকে ‘আয্যি’, আর ‘আয্যি’ থেকেই সন্মানীয় ব্যক্তিদের নাম বা সম্বোধনের শেষে ‘জী’ যুক্ত করার রীতি। (সূত্র: Indigenous Indians: Agastya to Ambedkar by Koenraad Elst)
এরপর, ‘আর্য্য আক্রমণে সিন্ধু সভ্যতার পতনে’র কথা। মহেঞ্জোদারোয় প্রাপ্ত তেত্রিশ বা সাইত্রিশটি কঙ্কাল বিশ্লেষণ করে ইতিহাসকার হুইলার সাহেব সর্বপ্রথম এই গুজবটি রটিয়েছিলেন। মহেঞ্জোদারোর আয়তন প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ বর্গ ফুট, সেখানে বাড়ির সংখ্যা প্রায় সাড়ে দশ হাজার। এর জনসংখ্যা ছিল তিরিশ থেকে চল্লিশ হাজারের মধ্যে। (তথ্যসূত্র: Deptt of Archaeology and Museums, Govt of Pakistan, Oxford University ও National Geographic) সেখানে মাত্র গোটা তিরিশেক কঙ্কাল কোন যুক্তিতে ‘large scale destruction and abolition of Indus Valley Civilisation’-এর প্রমাণ হয়ে ওঠে, -তা সত্যিই বিস্ময়কর। (‘জামা কিনিতে গেলাম, পাইলাম একপাটি মোজা; এখন ভাবিতেছি, ঐটেকেই কাটিয়া ছাঁটিয়া কোনোমতে জামা করিয়া পরিব।’ -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।)
এবার রইল পড়ে ঘোড়ার ব্যবহার জানা আর না জানা। যেহেতু বৈদিক সাহিত্যে অশ্বের উল্লেখ আছে, আর সিন্ধু সভ্যতায় ঘোড়ার কঙ্কাল পাওয়া যায় নি, তাই ‘ঘোড়ার ব্যবহার’কে দুই সভ্যতার বিভাজন রেখা ধরে বসা হল। কিন্তু, বৈদিক সাহিত্যে তো দেবতা, অসুর, দৈত্য, দানব, হস্তপদবিশিষ্ট নাগ, গরুড় পক্ষী, ছাগমুণ্ড দক্ষ, যক্ষ, রাক্ষস, কিন্নর, গন্ধর্ব, পারিজাত পুষ্প –এদেরও উল্লেখ আছে এবং তাদের কারুর-ই জীবাশ্ম পাওয়া যায় নি (পাওয়ার কথাও নয়)! এদিকে গুজরাতের সুরকোডাটায় সিন্ধু সভ্যতার পুরাতাত্ত্বিক সাইটে ঘোড়ার কঙ্কাল পাওয়া যাওয়ায় ‘অশ্বের ব্যবহার’-তত্ত্বেও দুলুনি লেগেছে বইকি।
সাম্প্রতিক কালে সরস্বতী নদীর প্রাচীন গতিপথ আবিষ্কৃত হওয়ার পর দেখা গেছে তথাকথিত ‘সিন্ধু সভ্যতা’র আজ অবধি আবিষ্কৃত কম-বেশি ২৬০০ পুরাতাত্ত্বিক স্থানের প্রায় ২০০০টির অবস্থান সিন্ধু নয়, সরস্বতী নদীখাত বরাবর। কিন্তু, আজও একদল পণ্ডিত (দেশিদের মধ্যে হাবিব, থাপার, প্রমুখ) সরস্বতী নদীর অস্তিত্বই স্বীকার করেন না, বলেন –এই নদী নাকি একটি বৈদিক কল্পনা মাত্র! কিন্তু, ১৯৮০ সালে আমেরিকার ল্যান্ডস্যাট ও ১৯৮৪ সালে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের আই. আর. এস. ১ সি. উপগ্রহ-চিত্রে সরস্বতী নদীখাত চিহ্নিত হয়। নদীটি হিমালয়ের বন্দরপুছ হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হয়ে হরিয়ানার আদিবদরী, রাখিগিরহি (‘সিন্ধু’ সভ্যতার বৃহত্তম প্রত্নতাত্ত্বিক সাইট) হয়ে আরাবল্লির পশ্চিম দিক দিয়ে রাজস্থানের কালীবঙ্গান, পাকিস্তানের নওয়াকোট হয়ে কচ্ছের রণে এসে আরবসাগরে মিশেছিল। মোটামুটি ১৮০০-১১০০ খ্রী.পূ. –এর মধ্যে কোনও এক সময়ে ভূমিকম্পে আরাবল্লি ও হিমালয়ের plate-shifting হয়। এর ফলে নদীটিকে পুষ্টকারী জলধারাগুলি (যমুনা, সুপিন, রুপিন, টনস, ইত্যাদি) গতিপথ পরিবর্তনের কারণে নদীটি ক্রমশঃ শুকিয়ে যায়। থর মরুভূমির সৃষ্টি হয়। ১৯৯৭ সাল নাগাদ ভারত সরকার এই শুকনো নদীখাত বরাবর ২৪টি নলকূপ খোঁড়ে। ভাবা অ্যাটোমিক রিসার্চ সেন্টার এই নলকূপের জলের আইসোটোপিক পরীক্ষা করে জানায় –সেই জলের উৎস হিমালয় পর্বত। (সূত্র: January 1998 issue of ‘Current Science’ journal, Journal of Indian Society of Remote Sensing)... রাজস্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হ্রদগুলির জল ও তার তলদেশের পাথর-ও হিমালয়ের সন্তান। সুতরাং, এই প্রশ্ন-ও উঠতেই পারে, -সিন্ধু সভ্যতা ঠিক কতটা শুধুমাত্র ‘সিন্ধু সভ্যতা’?... এর পাশাপাশি ঋগ্বেদ জুড়ে নদী সরস্বতীর বন্দনাকে বিবেচনা করলে বোঝা যায় -দুটি সভ্যতা আসলে একই।
এরপরেও আর্য্যদের তথাকথিত নগর-বিরোধীতার প্রসঙ্গ উঠলে মোল্লা নাসিরুদ্দিনের ঢঙে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে, -এটা যদি বেড়াল হয়, তাহলে মাংস কোথায়? আর এটা যদি মাংস হয়, তাহলে বেড়াল কোথায়!? আসলে সিন্ধু সভ্যতা আর বৈদিক সভ্যতাকে গোড়াতেই আলাদা ধরে নেওয়ার পর যখন বৈদিক সভ্যতার কোনও পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেল না, তখন জবরদস্তি তাকে গ্রামীণ বলে দাগিয়ে দেওয়া হল। নইলে একদিকে যে জাতিকে পৃথিবীর প্রায় সবকটি উন্নত সভ্যতার জনক বলা হয়, তারা কখনও নগর বিরোধী হতে পারে?
ভৃত্যের জ্ঞান, ইতিহাস বা ঐতিহ্য প্রভুর থেকে মহানতর হলে প্রভু তা কোনওদিনই মেনে নেয় না। এদেশের একদা প্রভুরা এদেশের ইতিহাস লেখার সময় তার যথেষ্টই পরিচয় রেখেছেন। বস্তুতঃ, আর্য্য আগমন তত্ত্বের বিপক্ষে সহস্রাধিক প্রমাণ ও শতাধিক গ্রন্থ আছে। পারস্যের সম্রাট দারায়ুসের সমাধি আবিষ্কার হলে দেখা যায় সেখানে তার পরিচয় হিসেবে লেখা আছে ‘একজন পারসীক, একজন পারসীকের পুত্র, একজন আর্য্য, আর্য্যবংশোদ্ভূত’। -আর্য্য আগমন তত্ত্বে এ ছিল একটি বড়ো ধাক্কা। হাল আমলের গবেষকরাও এই তত্ত্বকে নাকচ করেছেন। যদিও মেক্ল সাহেবের প্রবর্তিত শিক্ষাব্যবস্থার গুণে বহু ভারতীয় আজও সত্যটি মানতে চান না।
‘আর্য্য’ শব্দটি জাতিবাচক নয়, গুণবাচক। ঋগ্বেদ (১.৫১.৮) অনুসারে এর অর্থ ‘বিদ্বান্, অনুষ্ঠাতা’। অমরকোষ টিকা অনুসারে এর অর্থ ‘উপজীব্যতা হেতু উপগম্য’। সহজ করে বললে, জীবিকার জোরে সমাজের উপরিভাগে উঠে আসা মানুষজন। (আজকের সমাজের সাপেক্ষে অফিসের মেজবাবু ছোটবাবুর থেকে বেশি আর্য্য, আবার বড়বাবু মেজবাবুর থেকে বেশি আর্য্য।) এই ‘আর্য্য’ থেকে ‘আয্যি’, আর ‘আয্যি’ থেকেই সন্মানীয় ব্যক্তিদের নাম বা সম্বোধনের শেষে ‘জী’ যুক্ত করার রীতি। (সূত্র: Indigenous Indians: Agastya to Ambedkar by Koenraad Elst)
এরপর, ‘আর্য্য আক্রমণে সিন্ধু সভ্যতার পতনে’র কথা। মহেঞ্জোদারোয় প্রাপ্ত তেত্রিশ বা সাইত্রিশটি কঙ্কাল বিশ্লেষণ করে ইতিহাসকার হুইলার সাহেব সর্বপ্রথম এই গুজবটি রটিয়েছিলেন। মহেঞ্জোদারোর আয়তন প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ বর্গ ফুট, সেখানে বাড়ির সংখ্যা প্রায় সাড়ে দশ হাজার। এর জনসংখ্যা ছিল তিরিশ থেকে চল্লিশ হাজারের মধ্যে। (তথ্যসূত্র: Deptt of Archaeology and Museums, Govt of Pakistan, Oxford University ও National Geographic) সেখানে মাত্র গোটা তিরিশেক কঙ্কাল কোন যুক্তিতে ‘large scale destruction and abolition of Indus Valley Civilisation’-এর প্রমাণ হয়ে ওঠে, -তা সত্যিই বিস্ময়কর। (‘জামা কিনিতে গেলাম, পাইলাম একপাটি মোজা; এখন ভাবিতেছি, ঐটেকেই কাটিয়া ছাঁটিয়া কোনোমতে জামা করিয়া পরিব।’ -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।)
এবার রইল পড়ে ঘোড়ার ব্যবহার জানা আর না জানা। যেহেতু বৈদিক সাহিত্যে অশ্বের উল্লেখ আছে, আর সিন্ধু সভ্যতায় ঘোড়ার কঙ্কাল পাওয়া যায় নি, তাই ‘ঘোড়ার ব্যবহার’কে দুই সভ্যতার বিভাজন রেখা ধরে বসা হল। কিন্তু, বৈদিক সাহিত্যে তো দেবতা, অসুর, দৈত্য, দানব, হস্তপদবিশিষ্ট নাগ, গরুড় পক্ষী, ছাগমুণ্ড দক্ষ, যক্ষ, রাক্ষস, কিন্নর, গন্ধর্ব, পারিজাত পুষ্প –এদেরও উল্লেখ আছে এবং তাদের কারুর-ই জীবাশ্ম পাওয়া যায় নি (পাওয়ার কথাও নয়)! এদিকে গুজরাতের সুরকোডাটায় সিন্ধু সভ্যতার পুরাতাত্ত্বিক সাইটে ঘোড়ার কঙ্কাল পাওয়া যাওয়ায় ‘অশ্বের ব্যবহার’-তত্ত্বেও দুলুনি লেগেছে বইকি।
সাম্প্রতিক কালে সরস্বতী নদীর প্রাচীন গতিপথ আবিষ্কৃত হওয়ার পর দেখা গেছে তথাকথিত ‘সিন্ধু সভ্যতা’র আজ অবধি আবিষ্কৃত কম-বেশি ২৬০০ পুরাতাত্ত্বিক স্থানের প্রায় ২০০০টির অবস্থান সিন্ধু নয়, সরস্বতী নদীখাত বরাবর। কিন্তু, আজও একদল পণ্ডিত (দেশিদের মধ্যে হাবিব, থাপার, প্রমুখ) সরস্বতী নদীর অস্তিত্বই স্বীকার করেন না, বলেন –এই নদী নাকি একটি বৈদিক কল্পনা মাত্র! কিন্তু, ১৯৮০ সালে আমেরিকার ল্যান্ডস্যাট ও ১৯৮৪ সালে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের আই. আর. এস. ১ সি. উপগ্রহ-চিত্রে সরস্বতী নদীখাত চিহ্নিত হয়। নদীটি হিমালয়ের বন্দরপুছ হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হয়ে হরিয়ানার আদিবদরী, রাখিগিরহি (‘সিন্ধু’ সভ্যতার বৃহত্তম প্রত্নতাত্ত্বিক সাইট) হয়ে আরাবল্লির পশ্চিম দিক দিয়ে রাজস্থানের কালীবঙ্গান, পাকিস্তানের নওয়াকোট হয়ে কচ্ছের রণে এসে আরবসাগরে মিশেছিল। মোটামুটি ১৮০০-১১০০ খ্রী.পূ. –এর মধ্যে কোনও এক সময়ে ভূমিকম্পে আরাবল্লি ও হিমালয়ের plate-shifting হয়। এর ফলে নদীটিকে পুষ্টকারী জলধারাগুলি (যমুনা, সুপিন, রুপিন, টনস, ইত্যাদি) গতিপথ পরিবর্তনের কারণে নদীটি ক্রমশঃ শুকিয়ে যায়। থর মরুভূমির সৃষ্টি হয়। ১৯৯৭ সাল নাগাদ ভারত সরকার এই শুকনো নদীখাত বরাবর ২৪টি নলকূপ খোঁড়ে। ভাবা অ্যাটোমিক রিসার্চ সেন্টার এই নলকূপের জলের আইসোটোপিক পরীক্ষা করে জানায় –সেই জলের উৎস হিমালয় পর্বত। (সূত্র: January 1998 issue of ‘Current Science’ journal, Journal of Indian Society of Remote Sensing)... রাজস্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হ্রদগুলির জল ও তার তলদেশের পাথর-ও হিমালয়ের সন্তান। সুতরাং, এই প্রশ্ন-ও উঠতেই পারে, -সিন্ধু সভ্যতা ঠিক কতটা শুধুমাত্র ‘সিন্ধু সভ্যতা’?... এর পাশাপাশি ঋগ্বেদ জুড়ে নদী সরস্বতীর বন্দনাকে বিবেচনা করলে বোঝা যায় -দুটি সভ্যতা আসলে একই।
No comments:
Post a Comment